, বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪ , ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছেন ৪৪ বছরের মিন্টু, স্বপ্ন ডাক্তার হওয়া

  • আপলোড সময় : ০৬-০৫-২০২৩ ১১:৫২:০০ পূর্বাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০৬-০৫-২০২৩ ১১:৫২:০০ পূর্বাহ্ন
অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছেন ৪৪ বছরের মিন্টু, স্বপ্ন ডাক্তার হওয়া
এখন কৃষক মিন্টু মিয়ার জীবন থেকে পার হয়ে গেছে ৪৪ বছর। অভাবের সংসারে পড়াশোনা করতে পারেননি তিনি। তাই আক্ষেপের যেন শেষ নেই। এখন তার বয়স ৪৫ বছর। এ বয়সে তিনি লক্ষ্যে অবিচল। যেভাবেই হোক তাকে পড়াশোনা শেষ করতেই হবে। স্থানীয় একটি মাদরাসায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়ছেন তিনি। স্বপ্ন দেখেন ডাক্তার হওয়ার। মিন্টু মিয়া জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার পোগলদিঘা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের মালীপাড়া এলাকার মৃত জজ মিয়ার ছেলে। 

দুই মেয়ে এবং এক ছেলের জনক তিনি। তারা পড়াশোনা শেষ করে এখন চাকরি করছেন। মিন্টু মিয়া সকালে ঘুম থেকে উঠেই মালীপাড়া আদর্শ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসায় বই হাতে ছুটে চলেন। এ নিয়ে আশেপাশের লোকজন টিপ্পনী কাটলেও এখন তিনি এ গ্রামের অনেক তরুণের অনুপ্রেরণা। মিন্টু মিয়া জানান, কৃষক পরিবারে জন্ম তার। খুব ছোটকালেই বাবা-মাকে হারিয়েছেন তিনি। তাই আর পড়াশোনা করা হয়নি। এখন ছেলেমেয়েরা বড় হয়েছে। তিনিও কামাই রোজগার করেন। সংসারে অভাব নেই। তাই ছোটকালের দুঃখ ঘুচাতে ডাক্তার হতে চান।
 
তিনি আও জানান, মাদরাসায় যেতে তার খুব ভালো লাগে। শেষরাতে ঘুম থেকে উঠে স্কুলে যাওয়ার জন্য তৈরি হন। সকালে উঠেই গরু-বাছুরকে খাওয়ানো পর আধা কিলোমিটার হেঁটে মাদরাসায় যান। ক্লাস শেষে আবারও পরিবারের কাজে লেগে পড়েন। দীর্ঘ আটবছর ধরে এভাবেই পড়াশোনা করছেন তিনি। তবে নবম শ্রেণিতে ওঠার পর সংসারের সব কাজ বাদ দিয়ে পুরোপুরি পড়াশোনায় মনোযোগী হতে চান।

তার এমন কাজে অনেকেই ভালো চোখে না দেখলেও খুশি মাদরাসার শিক্ষকরা। মালীপাড়া আদর্শ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষিকা আয়শা খাতুন বলেন, মানুষ চাইলে পারে না এমন কিছু নেই। মিন্টু মিয়া তার জ্বলন্ত উদাহরণ। দীর্ঘদিন ধরেই মিন্টু মিয়াকে দেখছি। তিনি পড়াশোনায় বেশ মনোযোগী। প্রতিনিয়তই মাদারাসায় আসেন। তাকে দেখে নতুন প্রজন্মের অনেককিছুই শেখার আছে।
 
সম্প্রতি তাকে নিয়ে ভিডিও তৈরি করেন চলো হাত বাড়াই ফাউন্ডেশন নামে এক সামাজিক সংগঠন। তাকে উৎসাহিত করতে হাতে তুলে দেন খাতা-কলম। কথা হয় এ সংগঠনের পরিচালক লুৎফর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, পাশাপাশি বাড়ি হওয়ায় দীর্ঘদিন ধরেই আমি তাকে দেখছি। একসময় তিনি মালীপাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়েছেন। যখন বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করতেন তখন অনেকে তাকে নিয়ে কটু কথা বলতেন। তবুও তিনি সেই কথা কানে না নিয়ে ছুটে চলেছেন। এখন তিনি প্রাথমিকের গণ্ডি পেরিয়ে মাধ্যমিকে। তার ইচ্ছে তিনি একদিন অনেক বড় হবেন। দেশের কাজে নিজেকে নিয়োগ করবেন।

এদিকে মালীপাড়া আদর্শ ইসলামিয়া দাখিল মাদরাসার সহকারী শিক্ষক মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, সংসারের সব কাজ শেষে খুব সকালেই তিনি স্কুলে ছুটে আসেন। তার ইচ্ছে পড়াশোনা শেষে তিনিও উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হবেন। তার এমন আগ্রহে বিদ্যালয়ের সবাই খুশি।
সেনাকুঞ্জে কুশল বিনিময় করলেন ‍ড. মুহাম্মদ ইউনূস-খালেদা জিয়া

সেনাকুঞ্জে কুশল বিনিময় করলেন ‍ড. মুহাম্মদ ইউনূস-খালেদা জিয়া